করোনা ভাইরাসে (কোভিড ১৯ পজেটিভ) সংক্রমিত হয়েও স্বাস্থ্য বিধি না মেনে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোসতানশির বিল্লাহ গত বৃহস্পতিবার (৬জুলাই) সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে ,গত বৃহস্পতিবার ২৯জুন ( পবিত্র ঈদুল আজহার দিন) সকালে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোসতানশির বিল্লাহ সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হন। গত ২জুলাই রবিবার রাতে তিনি ঢাকা থেকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের সরকারি বাসভবনের আসেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত সোমবার (৩জুলাই) সকালে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করালে তাঁর শরীরের কোভিড ১৯পজেটিভ শনাক্ত হয়। কোভিড ১৯ মুক্ত না হয়েই গত বৃহস্পতিবার (৬জুলাই) সকাল থেকেই তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিজ কক্ষে বসে দাপ্তরিক কাজ কর্ম চালিয়ে আসছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোসতানশির বিল্রাহ স্যার স্বাস্থ্য বিধি না মেনে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশপাশি তিনি দাপ্তরিক কাজ কর্ম চালিয়ে আসছেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় এ নিয়ে তাঁকে আমরা কিছু বলতে পারছি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা ও ভর্তি থাকা কয়েকজন রোগী বলেন, টিএইচও স্যার (উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা) ডা মোসতানশির বির্লাহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুনেছি। অথচ তিনিই নিজে রোগী হয়ে আমাদেরকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এতে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা আমরা সবাই করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোসতানশির বিল্লাহ বলেন, আমি পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সকালে সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম।এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে তাই দ্বিতীয়বার করোনার পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন মনে করিনি। বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালে রোগী দেখছি না। দাপ্তরিক জরুরি কিছ কাজ ছিল যা অফিসে গিয়ে করেছি।
এখন আমি পুরোপুরি সুস্থ বোধ করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজ কর্ম চালিয়ে আসছেন বলে বেশ কয়েকজন আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি একজন চিকিৎসক, তাই তাঁকে তো এ নিয়ে আমি পরামর্শ দিতে পারি না।