//

জৈন্তাপুরে আশ্রয় পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা

22 mins read

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার স্বরূপ নিজেদের ঘর হল। কখনো ভাবতেই পারিনি ঘর পাব। দীর্ঘ দিন যাযাবরের মত অন্যের বাড়িতে থেকেছি। জায়গা ক্রয় করা এবং ঘর বানানোর সামর্থ ছিল না আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে আজ নিজেদের মাথা গুজার ঘর হয়েছে। মমতাময়ী মায়ের নিকট হতে আশ্রয় পেয়ে আমরা সুখি। কথা গুলো বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ভূমিহীন ঘরহীন অসহায় পরিবারের সদস্য মিনারা বেগম, আছিয়া খাতুন, জয়নাল আবেদীন, জহুরা বেগম, হাজেরা বেগম, নুর আক্তার, বেগম বিবি, কমল বেগম, হালিমা বিবি ও জালাল উদ্দিন সহ উপকারভোগীরা।

সরেজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলার গোয়াবাড়ী এলাকায় সরকারী খাঁস ভূমিতে নির্মিত মুজিব নগরের প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ১৮২ টি ঘর বিতরণ করেন ভূমি ও ঘরহীন পরিবারের মধ্যে। আর ৯৮টি ঘর নির্মানের প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। এছাড়া উপজেলা চারিকাটা ইউনিয়নে ১১টি এবং চিকনাগুল ইউনিয়নে ৪৫টি ঘর বিতরণ করা হয়।

গোয়াবাড়ী মুজিব নগর প্রকল্পপ ঘুরে উপকারভোগীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, আমরা যে ঘর উপহার পেয়েছি তুলনামুলক ভাবে মান সম্পন্ন। মুজিব নগরের নির্মিত কিছু সংখ্যাক ঘরের বৃষ্টির পানি ঢুকছে। পানি নিষ্কাসনের জন্য ড্রেইন নির্মাণ ও চলাচলের জন্য রাস্তা জরুরী। এছাড়া গোয়াবাড়ী ও চারিকাটা ইউনিয়নের নির্মিত ঘরে তেমন কোন ক্রটি চোঁখে পড়েনি বলে জানান উপকারভোগীরা।

উপকারভোগী জালাল উদ্দিন জানান, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বিড়াখাই গ্রামের দির্ঘদিন অন্যের বাড়ীতে ছিলাম, নানা রকম অসুবিধা হয়েছে। পরিবার নিয়ে কোন রকম দিন পার করেছি। আমি পঙ্গু হওয়ার পরে জৈন্তাপুর ষ্টেশন বাজারে রাস্তার পাশে বসে লাল-চা বিক্রয় করে ২সন্তান ও বউ নিয়ে কোন মতে দিন যাপন করেছি। জায়গাক্রয় এবং পাকা ঘর বানানোর সামর্থ ছিল না। স্বপ্ন দেখতাম একটা ঘর তৈরী করবো। বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী, মমতাময়ী মা জননী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নপূরণ করেছেন।

উপকারভোগী হালিমা বেগম জানান, আমি কলেজ পড়–য়া মেয়ে নিয়ে ফুলবাড়ী গ্রামে স্বামীর বসত ভিটায় বসবাস করতাম। কিন্তু স্বামী মৃত্যুর অভাবের তাড়নায় পূর্বে বাড়ীটির একটি অংশ বিক্রয় করে দেন। কিন্তু ভূমি বিক্রয়ের সময় ভূমিক্রেতা পুরো বাড়ী লিখেনেয়। পরবর্তীতে আমাকে জোর পূর্বক বাড়ী ছাড়া করে। আমি মেয়েকে নিয়ে আশ্রয়হীন ভাবে অন্যের বাড়ীতে থাকতাম। আমার পক্ষে দুবেলা খাবার যেখানে জোগাড় করা অসম্ভব ছিল তার মধ্যে বাড়ী করা ঘর বানানোর কোন উপয় ছিলনা। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাড়ী উপহার পেয়ে আমি খুব খুশি। এখন নিজের একটি বসত বাড়ী পেয়ে কলেজ পড়–য়া মেয়েকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারছি। তিনি আরও বলেন, ঘরের মান ভাল, কাজ ভাল হয়েছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত আজমেরী হক জানান, আমি যোগদানের পূর্বে জৈন্তাপুরে ১২৬টি পরিবারকে প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘর মাননীয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। উপজেলায় যোগদানের পর হতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ফারুক আহমদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিনকে সাথে নিয়ে জমি নির্ধারণ সহ নিয়মিত ঘর নির্মাণ প্রক্রিয়া তদারকি করছি। ঘরের মান বজায় রাখতে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি আরও জানান, মুজিব নগর প্রকল্পে বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেইন নির্মাণ ও রাস্তা নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন, বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলমান, খাবার পানি ও গোসলের ব্যবস্থা জন্য একটি পরিত্যাক্ত পুকুর সংস্কার ও ঘাট নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ জানান, আমার উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে উপকারভোগীরা খুশি হয়েছেন। ইতোমধ্যে উপকার ভোগীরা ঘরে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদরকির কারনে ঘরের গুনগত মান বজায় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version