/////

তাহিরপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

19 mins read

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে রাতের আধারে রাস্তা থেকে বাড়িতে নিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে । নিহত যুবকের নাম মো. সাকিব মিয়া (২৫)। তিনি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের খাটো মজিবুর রহমানের ছেলে। মঙ্গলবার মধ্য রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

জানা যায়, উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের মোশারফ হোসনের সঙ্গে একই গ্রামের খাটো মজিবুর রহমানের দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দন্ধ চলে আসছিল। ইতিপূর্বে দু’পক্ষের মধ্যে আরও কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনাও ঘটেছে। দু’পক্ষের মধ্যে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধার দিকে নিহত সাকিব বাড়ি থেকে চক বাজারে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে আসে। রাত ১ টার দিকে সাকিবের পিতা খাটো মজিবুর রহমানের কাছে ফোন আসে সাকিব কে মোশারফের বাড়িতে মারপিট করছে প্রতিপক্ষের লোকজন । এ সংবাদ পেয়ে খাটো মজিবুর রহমান গ্রামের তৃতীয় পক্ষের দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে মোশারফ হোসেনর বাড়িতে যেয়ে তার ছেলেকে ফেরত চান। মোশারফের লোকজন সাকিবকে তার পিতার কাছে না দিয়ে উল্টো খাটো মজিবুরকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে গেইট বন্ধ করে দেন। পরে সংবাদ পেয়ে রাত দুইটার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মোশারফ ও মজিবুর রহমানের বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাকিবকে উদ্ধার করে। গুরুতর আহত অবস্থায় মোশারফের লোকজন তাকে প্রথমে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তাকে ভর্তি করে। পরে এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার অবস্থা মমূর্ষ দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরন করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পর মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকধীন অবস্থায় সাকিব মৃত্যুর কূলে ঢলে পড়েন।

নিহতের মা তেরাবজুন বেগম বলেন, সোমবার সন্ধার দিকে চক বাজারে যাওয়ার কথা বলে সাকিব বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পূর্ব সুত্রুতার জের ধরে তার ছেলেকে মোশারফের লোকজন রাস্তা থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে মারপিট করে হাত পা ভেঙ্গে মেরে ফেলেছে। মোশারফ গংরা গত বছর আমার ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল এবং আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমার ছেলের খুনিদের বিচার চাই।

নিহতের বাবা খাটো মজিবুর রহমান বলেন, পূর্ব সুত্রুতার জের ধরে বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে দু-হাত দু-পা ভেঙে মেরে আমার ছেলেকে। খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে মোশারফের বাড়িতে গিয়ে তাদের হা পা ধরে আকুতি মিনতি করেছি ছেলেকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু তারা আমার ছেলেকে ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাটায়। সকালে শুনি আমার ছেলে মারা গেছে।

মোশারফ হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,গত কিছুদিন আগে আমার ছোট ভাই মোশাহিদের সরীলে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল সাকিব। পরে বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি বলেন আমার ছেলে মানুষিক রোগী। গতরাত ১ টার দিকে আমার বাড়ির গেইটের বাহিরে এসে ঘরের বেড়া এবং গেইটে লাথি মারতে থাকে এবং পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিবে বলে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। পরে আমরা গেইটের ভিতর থেকে চিৎকার দিলে আশ পাশের মানুষ ডাকাত ডাকাত বলে তাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে তার বাবা এসে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে হাসপাতালে যান।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, সাকিব নামে একজনকে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে । এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের চেষ্টা করছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version