দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ (বাবিপ)।
শনিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সদস্যবৃন্দ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে, বিদেশি কিছু রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের স্বাক্ষর সম্বলিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি, দেশীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জন ও মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ও সামাজিক পরিমণ্ডলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন প্রচেষ্টা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার সামিল।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সদস্যবৃন্দ মনে করে যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ড ছিল প্রগতিশীল এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার বাংলাদেশ সৃষ্টির পথে এক বড় অন্তরায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে দীর্ঘদিন দেশে সামরিক শাসন চলেছে। সামরিক শাসনকালে অগণতান্ত্রিক পন্থায় দেশ পরিচালিত হয়েছে।
১৯৯০সালে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হয় এবং গণতন্ত্র বিকাশের অভিযাত্রা সূচিত হয়। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ব্যত্যয় ঘটে এবং আমাদের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়। পুনরায় গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশি-বিদেশি একটি সংঘবদ্ধ চক্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়- এমন চক্রান্তে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করছে। আন্তর্জাতিক একটি চক্র এবং তাদের মদদপুষ্ট গণমাধ্যমের এরূপ হীন চক্রান্তের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। আমরা মনে করি, যারা স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের দিনেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের প্রচেষ্টা চালায় তাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। তারা জাতীয় নির্বাচনে মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এবং অর্থনৈতিক মুক্তি সংহত হবার পথে বিঘ্ন করার চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা করছি।
আশা করছি এমন পরিস্থিতিতে এসব মহল স্ব স্ব দায়িত্বের প্রতি পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে এবং বস্তুনিষ্ঠতা রক্ষা করবে। আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক মহল স্ব স্ব দায়িত্বের বিষয়ে যত্নবান হবে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এবং দেশের মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়। এরূপ কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে এগিয়ে যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমাদের দৃঢ় আশাবাদ। সংশ্লিষ্ট সকলকে স্ব স্ব কাজে পেশাদারিত্ব বজায় রাখা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন এবং সততা ও নিষ্ঠার সমাজ তৈরিতে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখার আহ্বান জানাই।