ধর্মপাশায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে ধীরগতি

22 mins read

ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার নির্ধারিত সময়ের ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তিনতলা ভবন নির্মাণ কাজ এখনো ঝুলে আছে। দুই বছরেরর বেশি সময়ের মধ্যে এই ভবন নির্মাণের শতকরা মাত্র ৫ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কর্তৃপক্ষের নজর দারি না থাকায় যেনতেন ভাবে ভবন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। যথা সময়ে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এবং কাজের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও মুসুল্লিরা।
গণপূর্ত বিভাগের সুনামগঞ্জ কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বরছরে দরপত্রের মাধ্যমে ১৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের খানিকটা পশ্চিমে ধর্মপাশা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতির কেন্দ্রের তিলতলা ভবন নির্মাণের কাজটি পায় কবীর সিন্ডিকেট, ঢাকা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ২১ জুলাই। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই ভবন নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করার কথা ছিল। ঠিকাদার কবীর হোসেন ওরফে টিটোর নিয়োজিত শ্রমিকেরা ঐ বছরের নভেম্বর মাসের মাঝমাঝি সময়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। গতবছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ঠিকাদারের নিয়োজিত শ্রকিকেরা কাজ ফেলে রেখে সেখান থেকে চলে যান। এর পরই কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। মাস খানেক পর পর ঠিকাদারের দু একজন প্রতিনিধি এখানে এসে ঘুরে গেলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।
গতকাল বুধবার সরোজমিনে ভবন নির্মাণ কাজের এলাকায় গিয়ে সেখানে ঠিকাদার বা তাঁর কোনো শ্রমিককে পাওয়া যায়নি। বেশ কিছু রড পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের থানা উন্নয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, গত তিনমাস ধরে এই কাজটি বন্ধ রয়েছে। এই ভবনটির তদারকি কর্মকর্তা ভবন কাজের সময়ে নিয়মিত না থাকায় যেটুকু কাজ হয়েছে তা যেনতেন ভাবে করা হয়েছে। কাজটি সঠিক ভাবে তদারকি করা প্রয়োজন। এলাকার মুসুল্লিদের সুবিধার্থে কাজটি সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর ঘর। ঘর নির্মাণ কাজে নিয়ে ঢিলেমেসি করা কোনো অবস্থাতেই ঠিক হচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুততম সমযের মধ্যে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
ঠিকাদার কবীর হোসেনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ওই ঠিকাদারের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দাবি করে আকাশ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ভবনটির যাবতীয় কাজ আমিই দেখা শুনা করছি। যেটুকু কাজ হয়েছে তা ভালো ভাবেই হয়েছে। রড, সিমেন্ট, বালু ও পাথরের দাম হুহু করে বেড়ে গেছে। বিষয়টি আমরা গণপূর্ত বিভাগ ও ধর্মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি লিখিত জানিয়েছি। কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। ফান্ডে টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে চারমাস ধরে এই কাজটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
ধর্মপাশা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তিনতলা ভবন নির্মাণ কাজটি যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ ও হতাশাজনক। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। ভবনটির তদারকির দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইকবাল শিকদার বলেন, কাজের মেয়াদ বেশ আগেই শেষ হয়ে গেছে। কাজের মেয়াদ বাড়ানো জন্য ঠিকাদার আবেদন করেছেন। ভবন নির্মাণ কাজে কোন রকম অনিয়ম করা হয়নি। কাজের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভবন নির্মাণ কাজের শতকরা ৫ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদার অতিরিক্ত কোন বিল তুলেননি।
গণপূর্ত বিভাগের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুমিনুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ওই কার্যালয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তিনতলা ভবন নির্মাণের কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি। কাজের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version