/

নদী দিবসে সারী নদী বাঁচলে, বাঁচবে সারী সংশ্লিষ্ট সকল শাখা নদী

28 mins read

সারী নদী বাঁচলে, বাঁচবে সারী সংশ্লিষ্ট সকল শাখা নদী। সারী না বাঁচলে কি করে বাঁচবে সারীর শাখা প্রশাখা। নদী দিবসে সারী নদীর মামলা প্রত্যাহার চায় সচেতন মহল। জৈন্তাপুরের সারী নদীর সৃষ্টির ইতিহাস পরিবর্তন, নাকী বাংলার মানচিত্র হতে নীল নদ খ্যাত সারী নদীর নাম মুছে ফেলেত মামলা দায়ের করেছে একটি মহল।

সারী নদী হতে খনিজ সম্পদ বালু আহরনের উপর নিষেদাজ্ঞা জারী করে একটি প্রভাবশালী মহল। মামলা দায়েরের পর হতে সারী নদী হতে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন বন্দ রয়েছে। বালু উত্তোলন বন্দ হওয়ার কারনে উৎস মুখ হতে দেড় কিলোমিটার নদী ভরাট হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে সারীর অন্যতম শাখানদী বড় নয়াগাং ও কাটাগাং নদী সম্পুর্ণ পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। জীব বৈচিত্র ধব্বংস হয়ে পড়ে। অপরদিকে নিজপাট ও চারিকাটা ইউনিয়নের এক তৃতীংশ পানি শুণ্য হয়ে পড়ে। অপরদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব হতে।

সারী নদীর উৎসমুখ হতে খেয়াঘাট পর্যন্ত মামলা জটিলতার কারনে সরকার লীজ দেওয়া সম্ভব হয়নি। অপরদিকে লীজ না হওয়ায় বালু ভরাট হয়ে জীব বৈচিত্র সহ বাংলার নীল নদ হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য্য। ইতোমধ্যে সারী নদীর উৎসমুখ ভরাট হয়ে সারী নদীর সর্ববৃহত শাখা নদী বড় নয়া গাং নদী, কাটা গাং নদী এবং পুটিখাল নদী সম্পূর্ন ভরাট হয়ে মরা গাঙ্গে পরিনত হয়েছে। সারীর অন্যতম পুটিখালের অস্তিত্ব নেই।

স্বার্থনেষী মহলের মামলার কারনে নদী ভরট হওয়ায় নদী মার্তৃক জৈন্তাপুর উপজেলার সারী নদী, বড়নয়াগাং নদী, কাটাগাং নদী এবং পুটিখালের তীরবর্তী বাসীন্ধারা পানির জন্য হা হা কার করছে। সারী উৎস্য মুখ বন্দ হওয়ায় শাখা নদী গুলোতে পানি না থাকায় নিজপাট ইউনিয়নের প্রায় ৭টি ওয়ার্ডের বাসিন্ধাদের গভীর-অগভীর নলকুল ও কুয়া (ইন্দারা) এর পানির স্তর শুকিয়ে পড়ে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে । নিজপাট ও চারিকাট ইউপির ১০টি ওয়ার্ডের জীব বৈচিত্র ধ্বংসের মুখে গিয়ে দাঁড়ীয়েছে।

সচেতন নাগরিক হারুন মিয়া, রহিম উদ্দিন, সেলিম আহমদ, শামিম আহমদ, সাব্বির আহমদ, শরিফ আহমদ, নজমুল ইসলাম, নূরুল ইসলাম, মহলের দাবী মামলাকারীদের অর্থনৈতিক প্রভাবের জন্য সারী নদী ও সারীর শাখা নদীগুলেকে হত্যা করা হয়েছে। কেউই সারী নদীর উৎসমূখ এবং বড়নয়াগাং, কাটাগাং, পুটিখাল এবং নিজপাট ও চারিকাটা ইউপির বাসিন্ধাদের নিয়ে কথা বলছে না। মামলা জটিলতা দেখিয়ে সারীর উৎসমুখ হতে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা বালু ভরাট হয়ে নদীর প্রকৃত সৌন্দর্য্য হারিয়ে গেছে। বালু উত্তোলন না হওয়ায় সারীর শাখা নদী বড় নয়াগাং এবং কাটাগাং পানি শূন্য হয়ে শুকনো মরুভূমিতে পরিনত হয়েছে। পানির জন্য হা-হা কার করছে এলাকাবাসী। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হতে। বালু উত্তোলন বন্দ হওয়া দুটি নদী খনন করতে বিনা কারনে সরকার অন্তত ৩০ কোটি টাকা খনন ব্যয় করতে হবে। সারীর এমন ঘটনা ইতিহাসে এই প্রথম সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে জলমাড়, সাহেবমারা এলাকায় ৬০ হতে ৭০ফিট গীররতা ছিল। সেখানে বর্তমানে ১ফিট পানি নেই।

তারা আরও বলেন, সারী নদীর উৎসমুখ হতে নিশ্চিন্তপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত যদি সরকারী রাজস্ব আদাএয়র মাধ্যমে শ্রমিকরা বালু ও পাথর উত্তোলন ও আহরন করে নদীর ভরাটের প্রশ্নই আসে না। সারীর নদীর চলমান পানির রং পরিবর্তন হবে না, পানি ব্যবহারে নদীর তীরবর্তী বাসিন্ধাদের কোন প্রকার অসুবিধা হয় না। এলাকার পানির লেয়ার সিষ্টেম বন্দ হবে না। নদীর জীব বৈচিত্রের কোন প্রকার ক্ষতি সাধিত হত না। বর্তমানে সারী-১, ও সারী-২ চিহ্নিত অংশ বালু উত্তোলন হওয়ার কারনে পাশ্ববর্তী এলাকা ও নদীর সৌন্দর্য্য অক্ষুন্ন রয়েছে এবং সরকার রাজস্ব আদায় করছে। এমনকি নদীর নাব্যতা সটিক রয়েছে।

নদী দিবসে এলাকাবাসীর দাবী অভিলম্বে সারী নদীর উৎসমুখের মামলা প্রত্যাহার করে ইজারার মাধ্যমে বালু পাথর উত্তোলনের দাবী জানান। অন্তত দুই বৎসর বালু পাথর আহরণ করা হলে সারী নদী, বড় নয়াগাং নদী, কাটাগাং নদী তার যৌবন ফিরে পাবে। এছাড়া সারী নদীর দুই তীর কঠিন শীলা পাথরের সৃষ্ট। নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ার কোন আশংঙ্কাও নেই। স্বাধীনতার পূর্বে হতে নদীর প্রস্ততা যেমন আছে বর্তমানে তেমনি রয়েছে। মুলত পর্যটক বিহীন করতে পরিকল্পিত ভাবে বাংলার নীল নদ সারীকে ধ্বংস করতে মামলা করা হয়েছে। মামলার কারনে সিলেটের সর্ববৃহত বালু মহাল ধ্বংস করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত রাখছে সরকারকে। পানি দূর্ষন, নদীর পাড় ভাঙ্গন ইত্যাদি ভূল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে মুলত সারী নদীতে বাংলার মানচিত্র হতে মুছে ফেলতে তৎপরতা চালাচ্ছে।

ইমরান আহমদ সরকারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম বলেন, সরকার দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে অচিরেই সারী নদী তার আপন রূপ সৌন্দর্য্য বিলীন হয়ে বাংলার মানচিত্র হতে মুছে যাবে। জীব বৈচিত্র চিরতরে হারিয়ে যাবে। পানির লেয়ার নিচে চলে যাওয়ায় মরুভূমিতে পরিনত হবে নিজপাট ও চারিকাটা ইউপির অন্তত ১০টি ওয়ার্ড। নদী খনন করতে সরকারের অন্তত মোটা অংকের টাকা গচ্ছা যাবে। বালু উত্তোলন করা হলে নদী খননের প্রয়োজন দেখা দিবে না বরং কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করবে সরকার। পরিবেশ ও প্রকৃতি ফিরে পাবে প্রাণ চাঞ্চল্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version