প্রবাসীর সর্বস্ব নিয়ে তালাক দিলেন স্ত্রী

16 mins read

প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকায় কেনা জমি ও বানানো বাড়ি নিজের নামে লিখে নিয়ে তালাক দিয়েছেন এক নারী। দেশে ফিরে কিছু না পাওয়া সেই প্রবাসী স্ত্রী সহ আট জনের নামে মামলা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায়। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর আমলি আদালতে প্রতারণা এবং দেড় কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন মালয়েশিয়া ফেরত মাহফুজার রহমান।
মাহফুজার শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ী গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। আগামী ১৮ মের মধ্যে পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন মাহফুজার রহমানের সাবেক স্ত্রী রজনী খাতুন (৩৩), তাঁর বর্তমান স্বামী মো. রেজাউল করিম (৩২) এবং তাঁর বাবা আব্দুল খালেক (৫৫)। আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোছা চাঁন মুনী (৪৫), বিউটি বেগম (৩৮) এবং মোছা. শান্তি বেগম (৩৫) কে আসামির করা হয়।
মামলা সূত্রে এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাহফুজার রহমান ৪ বছর প্রেম করে বাড়ি হতে পালিয়ে বিয়ে করেন রজনী খাতুনকে। ৪বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালের আগস্টে মালয়েশিয়া যান মাহফুজার। এর ৬ মাস পর রজনী খাতুন গ্রামে স্বামীর বাড়ি হতে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। এরপর রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।
স্বামী মাহফুজারের পাঠানো টাকায় রজনী নিজের নামে জমি কিনতে থাকে। জামালপুর এলাকায় নিজ নামে জমি কিনে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়তলা বাড়ির ভিত দেন। একতলা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেন।
বাড়ি নির্মাণে আরও টাকা দরকার জানিয়ে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া মাহফুজারের সাত বিঘা জমি প্রায় ৭ লাখ টাকায় ইজারা দেন। এভাবে সাড়ে ১৩ বছরের প্রবাস জীবনে রজনীকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ প্রায় দেড় কোটি টাকা দেন মাহফুজার। তারমধ্যে উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল বাশারের (৪৫) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান রজনী।
গত ২০ জানুয়ারি দেশে ফিরে নিজের টাকায় নির্মিত বাড়িতে উঠতে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী রজনী তাঁকে তালাক দিয়েছে। এই বাড়িতে থাকার কোনো অধিকার তাঁর নেই। গত ২৫ মার্চ রজনী মামাতো ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে বসবাস করছে।
মাহফুজার রহমান বলেন, ‘সাড়ে ১৩ বছর মালয়েশিয়া থাকা অবস্থায় কোনো টাকাই নিজের জন্য রাখি নাই। নিজের শরীরের ওপর সর্বোচ্চ কষ্ট দিয়ে যা ইনকাম করেছি তার সবই স্ত্রী রজনীর হাতে পাঠিয়েছি। এখন আমার আর কিছুই নাই। লজ্জায় রাস্তায় চলতে পারি না। এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’
জানতে চাইলে রজনী খাতুন ফোনে বলেন, ‘আমি আবার বিয়ে করেছি। আবুল বাশারের সঙ্গে আমার কোনো অনৈতিক সম্পর্ক ছিল না।’
বিদেশ হতে পাঠানো টাকা মাহফুজারকে ফেরত দেবেন কবে জানতে চাইলে সংযোগটি কেটে দেন রজনী খাতুন। এরপর অনেক বার চেষ্টা করা হলেও তাঁর ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের বিষয়ে আবুল বাশারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি জবাব দেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version