/////

বিয়ানীবাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর দিয়ে ড্রেন নির্মানের অভিযোগ

19 mins read

বিয়ানীবাজারে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরস্থানের উপর দিয়ে ড্রেন নির্মানের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের বারইগ্রাম এলাকা এ ঘটনা নিয়ে উপজেলা জুড়ে বেশ তোড়পাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত পরিবারে দাবী এখানে কোন মুক্তিযোদ্ধার কবর নেই। ৩০/৪০ বছর ধরে এই স্থান দিয়েই তাদের বাড়ির পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যা সংস্কার করতে গিয়ে একটি পক্ষ বাধা দেওয়ার জন্য তা কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে।

স্থানীয়রা জানান, বারইগ্রাম কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিন শায়িত রয়েছেন। একটি প্রভাবশালী পরিবার কবরস্থানের মাঝখান দিয়ে তাদের বাড়ির ড্রেন নির্মান কাজ শুরু করে। এসময় পঞ্চায়েতের লোকজন তাতে বাধা দিলে নির্মান কাজ বন্ধ করে। তবে স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখাতে সে হামলা মামলার ভয় দেখাচ্ছে। নির্মানাধিন ড্রেনের নিচে নিহত বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিনের কবরস্থান বলে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে রুম্মান আহমদ।

এলাকাবাসী মুক্তিযোদ্ধার কবর সংরক্ষন এবং জোরপূর্বক ড্রেন নির্মান বন্ধ করতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বারইগ্রামের বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিন (স্মারক নং-যু,বিমসা,সিলেট/প্র৩/৫৫/২০০২/১৪৬৩) ২০০৮ সালে মারা যান পরে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এই কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গত ১৫ এপ্রিল কবরস্থান সংলগ্ন ভূমির মালিক ফারুক আহমদ ও তার পুত্র ফয়সল আহমদ সরকারি জায়গা উল্লেখ করে জোর পূর্বক ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর দিয়ে ড্রেন নির্মান করেন।

পরে স্থানীয় কবরস্থানের দায়িত্বশীলদের নিয়ে বাধা দিলেও তারা মানেনি। উল্টো এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের বিরুদ্ধে হুমকী ধামকী এবং সর্বশেষ হামলার ঘটনা সাজিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছে। মুক্তিযোদ্ধার কবর স্থান সংরক্ষন এবং তাদের মিথ্যা অভিযোগে হয়রানী বন্ধ করতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে ঘটনার বিষয়টি জেনে ভিন্ন ভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জামাল হোসেন, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ অনেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান টিটন জানান, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর দিয়ে ড্রেন নির্মানের মতো দৃষ্টতা দেখানো ঐ কুচক্রীমহলের বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কঠোর কর্মসূচী নিতে বাধ্য হবো। তদন্ত সাপেক্ষ এর সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন তিনি।

গোরস্থানের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, প্রভাবশালী ঐ পরিবার গোরস্থান দখলের পয়তারা করে সফল না হওয়ায় দুস্কৃতিকারিরা আদালতে একের পর এক হয়রানিমুলক মামলা দিয়ে যাচ্ছে।

অভিযুক্ত ফারুক আহমদের স্ত্রী সুরেতুন নেছা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গা দিয়ে আমাদের বাড়ির পানি প্রবাহিত হয়ে নিচের ডোবায় যাচ্ছে, পানি নিষ্কাশন স্বভাবিক রাখতে ইটের গাথুনি দিয়ে ড্রেন নির্মানের কাজ শুরু করতেই লোকজন বাধা দিয়েছে। আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, কবরস্থানের উপর দিয়ে ড্রেনের বিষয়টি জেনেছি। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলেছি বিষয়টি সবাইকে নিয়ে সুরাহা করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version