
মধ্যরাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সৈয়দ মুজতবা আলী হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৈকত রায়। বুধবার (১৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
সৈকত রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকতেন সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গতকাল রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের ১২-১৫ জন অনুসারী সৈকতের কক্ষে এসে এক আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্ক জড়ায়। পরে এ শিক্ষার্থীকে মারধর করে সীমান্তের অনুসারীরা। এতে তিনি বাধা দিলে সৈকতকেও মারধর করা হয়।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, এই ঘটনার পর ইংরেজি বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম জোর করে সৈকতের মুঠোফোন কেড়ে নেন এবং তাকে ৪২০ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে মারধর করার পর তার বিছানাপত্র কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে হলগেটে নামিয়ে দেয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর মুঠোফোনে ফ্লাশ দিয়ে জরুরি ফাইল ডিলিট দেয় এবং সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়ে নেন।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে সৈকত রায়কে হেনস্তার পাশাপাশি হুমকি দিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছিলেন বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি। পরে হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সিট ফিরে পান সৈকত।
মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে, ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম সীমান্ত, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম বাঁধন, ওমর ফারুক, ওশেনোগ্রাফি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফুর আসিফ, লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান আসিফ, শিমুল, রাকিব, তারেক, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামিম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনু, ইংরেজি বিভাগের একই বর্ষের মো. রিফাত ইসলাম, নিজাম।
এ বিষয়ে সৈকত রায় বলেন, হলের ৪২০ নং কক্ষে আমরা ৪ জন ছিলাম। একজন বাড়িতে আছে, আরেকজন রিডিং রুমে পড়াশোনায় ছিলেন। তখন কক্ষে আমি ও মেহেদী হাসান ছিলাম। মূলত মেহেদী হাসানকে মারধর করতেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসেছিল। আমি বাধা দিলে আমার সঙ্গেও তারা ঝামেলা করে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্ত সাংবাদিকদের বলেন, গত রাতে তিনি হলের ওই কক্ষে যাননি এবং কক্ষ থেকে কোনো ছাত্রকে বের করে দেওয়ার কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই।
এ বিষয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরফিন খান বলেন, গত রাতের ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছো। এডে অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।