
মাঠের সাংবাদিক আর ঘরের সাংবাদিক! বিস্তর ব্যবধান। আগে মাঠ চালাতো ঘরকে। এখন ঘর চালায় মাঠ! তবু চলে মাঠে বা তৃণমূলে মুক্ত সাংবাদিকতার চেষ্টা। আর ঘরের সাংবাদিকেরা কর্তার ইচ্ছেতে কর্ম সম্পাদনে ব্যস্ত। এই ইচ্ছেকর্ম সম্পাদনেও হুঁশবুশহীন হয়ে করতে হয় কত বলিদান! কখনো ঘরের শত্রুবিভীষণে, কখনো ফাঁদ পেতে, আবার কখনো সাড়ম্বরে। একচোখা-একতরফা-একরোখা নীতির বাণিজ্যিক সমাহারে সেখানে বিশ্বাসঘাতকতার আরেক নাম হুইসেলব্লোয়িং!
কাক নাকি কাকের মাংস খায় না। বলা হয়, সাংবাদিকেরা সাংবাদিকের মাংস খায়! ঘরের কাক দেখিয়ে দেয় বাইরের কাক। একাকারে, এক আহারে চলে তৈলমর্দন। তলে তলে তৈরি হয় আরেক সাংবাদিকতা। তার নাম নতজানু। যে যত নতজানু, সে তত জানু সাংবাদিক।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের চারপাশ সারা বছর বোবা থাকে। কেবল দুটো দিবসে মুখর হয়। সেখানকার শিশুও স্বাধীনতার মাহাত্ম্য জানে। এই জানার ব্যাপকতা দেখাতে রিপোর্ট ভুল নয়, ব্যবচ্ছেদটা ভুল ছিল। আরও ভুল মনের মাধুরী মেশানো।
এই ভুল মেনে নিয়ে সংশোধনের পরও কেন বাইরে চোখ? শোরগোল পাকিয়ে প্রচার পাকাপোক্ত করার সেই কূটকৌশল দৃশ্যত আবার সামনে! আক্রান্ত তৃণমূলের সাংবাদিক। কে চেনাল তাকে? ঘরের খবর বাইরে এনে দিল কোন হুইসেলব্লোয়ার? মধ্যরাতে তুলে নিয়ে সেই একই অস্ত্র, ডিজিটাল আইনে মামলা দায়ের।
আগে ধরা, তারপর মামলা! চেনা ছকের এ কৌশলের কী কারণ? কারণ একটাই, ঘরকে বশে রাখতে মাঠের সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরা। মাঠ মানে তৃণমূল। সামনে জাতীয় নির্বাচন। মৌলিক অধিকার নিয়ে সাংবাদিকতার তৃণমূল অবশ হলেই বশে থাকবে ঘরের সাংবাদিক।
মামলা প্রত্যাহার করে কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তি চাই। তার আগে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল। আরও চাই, নতজানু থেকে মুক্ত থাকুক তৃণমূল সাংবাদিকতা; বশ, অবশ হোক অবসান।