উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে রক্তিম হস্ত ছাপ এঁকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ইশতেহার দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের সম্মুখে এ হস্ত চাপ আঁকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এরআগে সম্মিলিতভাবে চলমান আন্দোলনের প্রতিবাদী ছবিসংযুক্ত প্ল্যাকার্ড, স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আইআইসিটি ভবনের সম্মুখে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে আইআইসিটি ভবনের সম্মুখে যে স্থানে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি,শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে সেখানে চিরন্তন লড়াইয়ে ইশতেহার হিসেবে রক্তিম হস্ত ছাপ আঁকেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২৬ শে জানুয়ারী আমাদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তবে এর ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার কোনরকম দৃশ্যমান প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয় নি।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের উপর করা ২টি মিথ্যা মামলা, ব্যক্তিগত নম্বর, বিকাশ, নগদ একাউন্টসহ অনলাইনে লেনদেনের মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর এক-দুটি ছাড়া সবগুলোই বন্ধ আছে।
তারা বলেন, ১৬ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে যত অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিবাদে যে অসাধারণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তার সচিত্র প্ল্যাকার্ড গতকাল বুধবার একটি মিছিল হয়েছে। আমাদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি, আমাদের দাবিগুলোও এখনো পূরণ হয়নি। যতদিন দাবি আদায় হবে না ততদিন আন্দোলন চলমান থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি একটি হলের প্রভোস্টকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন এ হলের ছাত্রীরা। পরে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কর্মীরা ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালালে, পরের দিন হামলার প্রতিবাদ ও একই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটা, শটগান, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।