রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক হত্যার ১০ বছর স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাভারে রানা প্লাজার সামনে আলোচনা সভা ও ৩ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
আয়োজিত আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন রানা প্লাজার আহত শ্রমিক রূপালী আক্তার। প্রধান বক্তা হিসাবে আলোচনা করেন নিহত শ্রমিক আঁখি আক্তারের মা নাসিমা আক্তার, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন। এ সময় রানা প্লাজায় নিহতদের স্বজন, শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, রানা প্লাজার ঘটনা পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। সারা দুনিয়ার কারখানার ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। এই দুঃসহ স্মৃতি আমরা হারিয়ে যেতে দিতে চাই না। আমরা এই ভয়াবহ স্মৃতি, রানা প্লাজায় হতাহতর শারিরীক, মানসিক ক্ষত সমস্তটাই পোশাক শ্রমিকসহ দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আমরা দুঃসহ স্মৃতি থেকে শক্তি নিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জীবিত শ্রমিকদের জন্য লড়াই করে যেতে চাই।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বসে হাজারো শ্রমিক প্রাণ হারান। অথচ ১০ বছরেও দোষী মালিক সোহেল রানাসহ অন্যান্যদের শাস্তি হয়নি। বিচারের এই দীর্ঘসূত্রিতা প্রমাণ করে, বাংলাদেশের শ্রমিকদের জীবনের মূল্য নেই মালিক, সরকার ও বায়ারের কাছে। এক দশকেও ক্ষতিপূরণের আইনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।
মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে আগামী ১ ও ২ এপ্রিল রাজধানীর শাহাবাগ মোড়ে, ৭ থেকে ১৫ এপ্রিল দৃক গ্যালারীতে এবং ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজার সামনে র্যালিসহ শ্রদ্ধা, প্রতিবাদ ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ আয়োজনের সাথে প্রতিবাদ র্যালি, আলোচনা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শিশুদের চিত্রাংকন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনও চলবে বিভিন্ন অঞ্চলে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত রানা প্লাজা ধ্বসে পড়েছিল।