জৈন্তাপুর প্রতিদিন ডেস্ক:
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ)‘র মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫ দিন ব্যাপী ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের গুয়াহাটিতে এই সম্মেলন চলবে।
সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম (বার), এনডিসি, পিএসসির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা, আইপিএসের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিএসএফ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ফ্রন্টিয়ার আইজিগণ এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
গতকাল ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভারতের গুয়াহাটিতে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম(বার), এনডিসি, পিএসসির‘র নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ভারতে প্রবেশ করেন। এ সময় তামাবিল সীমান্তে তাকে স্বাগত জানান বিএসএফ‘র মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার আইজি হরজিত সিংহ সহ ভারতীয় বিএসএফ‘র একটি প্রতিনিধি দল। অপরদিকে বিজিবি মহা পরিচালক তামাবিল সীমান্তে এসে পৌছালে তাকে স্বাগত জানান গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো ও আহত, হত্যা করা সম্পর্কে প্রতিবাদ জানানো এবং এ ধরনের কর্মকা- বন্ধে করণীয়। ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, হেরোইন এবং ভায়াগ্রা, সেনেগ্রাসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মাদকদ্রব্যের চোরাচালান রোধ করা। ভারতের অভ্যন্তরে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য, মাদকদ্রব্যের কারখানা, গুদাম এবং মাদকের চোরাচালান রোধ, মাদক পাচারকারীদের সম্পর্কিত তথ্যবিনিময়। ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান রোধ এবং অস্ত্র চোরাচালান রোধে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য বিনিময়। বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লঙ্ঘন, অবৈধ পারাপার, অনুপ্রবেশ রোধ। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়ন মূলক নির্মাণ কাজ না করা এবং বন্ধ থাকা বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজ যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা। উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি।
অপরদিকে রাজশাহী সীমান্তের চর মাজারদিয়া ও চর খানপুর এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে পদ্মানদীর ভারতীয় অংশ ব্যবহারের অনুমতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা। ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকা- পরিচালনা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা দ্রত সমাধানের জন্য ও ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা। ২৫ ডিসেম্বর সীমান্ত সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ২৬ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন বলে জানিয়েছেন বিজিবি‘র একটি সূত্র।