/////

অনশন ভেঙ্গে আলোচনার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

23 mins read

অনশন না ভেঙ্গে আলোচনা চায় শিক্ষার্থীরা, কাপন পড়ে শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল, উপাচার্যের পদত্যাগে গণঅনশন, শিক্ষার্থীদের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষার্থীরা চাইলে যে কোনো সময় মন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেকোনো সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই হতে পারে। আমি চাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখান থেকে সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি। এখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, অনশনে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা সবসময় তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি। আমাদের চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এ বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্য, শাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলসী কুমার দাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পর অনশন না ভেঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে যেকোন মূল্যে আলোচনা করতে চান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এ আহ্বান জানান তারা।

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রাজ বলেন, আমরা আমাদের সহপাঠীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এখনই অনলাইনে আলোচনায় বসতে চাই। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী কোন প্রতিনিধি দল পাঠালে তাদের সাথে আলোচলা। আমরা আর বিলম্ব করতে চাই না। পাশাপাশি শিক্ষকদেরকে তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করার জন্য আহ্বান জানান রাজ।

তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের এখানে অন্য কেউ ইন্ধন দিচ্ছ না। তাছাড়া আমাদের দাবিকে পুরো বাংলাদেশের মানুষের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অবিলম্বে আমরা এ ভিসির পদত্যাগ চাই। আমাদের আন্দোলনকে অনেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।

এসময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে নওরিন বলেন, ‘আমাদের ১৬ জন অনশনরত শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি আছেন। তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তাদের কয়দিনে যে অবস্থা হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, অনশনরত অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে এই শিক্ষা দেইনি যে তারা অন্যায়ের কাছে মাথানত করবে’।

এছাড়া শনিবার দুপুরে গোলচত্বরে কাপন পরে মৌন মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেতনা একাত্তরের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেণ। পরে একই স্থানে এসে জড়ো হয়। পরে রাত সাড়ে ৭টা এক সংবাদ সম্মেলনে গণঅনশনের ঘোষণা দেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছির সরকার। এরআগে কেন উপাচার্যের পদত্যাগে আন্দোলন শুরুর কারণ জানিয়ে একটি ডকুমেন্টারিরতে উদ্বুদ্ধ ঘটনা তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। ডকুমেন্টারিতে দেখা শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড এবং রাবার বুলেট ছুড়ছেন। এতে ডকুমেন্টারিতে উল্লেখিত আন্দোলনের কারণগুলো মিড়িয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহবান জানান তারা। এরপর রাত পৌঁনে ৯টা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে মোমবাতি প্রচলন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার থেকে ২৩ জন শিক্ষার্থী আমরণ শুরু করেছেন অনশন করেন। এতে এদিন রাত ১১টা পর্যন্ত তাদের মধ্যে থেকে ১৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে হয়েছেন, তাতে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version