গত তিন দিন আগে বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে বরগুনায় আসা সেই তরুণী আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর প্রেমিককে হাজির করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি।
আজ রোববার দুপুরে ওই তরুণীর প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজী ওই বাসায় খোঁজ-খবর নিতে এলে স্থানীয়রা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই তরুণী ঢাকার উত্তরা থেকে বরগুনার বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ওই যুবকের বাড়ির সামনে অবস্থান নেন।
তরুণী জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়িতে তাঁর বাড়ি। তিনি ঢাকার উত্তরায় থাকেন। সেখানের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিটি) সিভিল প্রকৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তরুণী অভিযোগ করে বলেন, তিন বছর প্রেমের পর সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে নানা অজুহাতে তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি বরগুনায় চলে আসেন। বাড়িতে এসে মাহমুদুল যোগাযোগ কমিয়ে দেন। এরপরই ওই তরুণী গত বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনায় গিয়ে হাজির হন এবং চান্দখালি বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসার সামনে অবস্থান নেন। কিন্তু তিনি আসার পরপরই মাহমুদুল ও তাঁর পরিবার বাসায় তালা দিয়ে গা ঢাকা দেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লা বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই তরুণী আসার পর থেকে বাসা ছেড়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে আছেন মাহমুদুল হাসান।
রোববার দুপুরে তরুণী বলছে, প্রেমিক মাহমুদুলের বাসা তালাবদ্ধ থাকায় তিনি বাসার সামনে বসে দিন-রাত পাড় করছেন। কিন্তু গত তিন দিনেও মাহমুদুল বা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ে তাঁর দাবি মেনে না নেওয়া হলে বাসার সামনে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, আমি এখানে মানবেতর দিনযাপন করছি এবং মাহমুদুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। ওর ফ্যামিলি যদি সাড়া না দেয় তবে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। কারণ, আমার ফেরার কোনো পথ খোলা নেই, তরুণী আরও বলেন, আমি স্থানীয় প্রশাসন ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন গুলোর কাছে হেল্প চাই।
বিয়ের দাবিতে বরগুনায় জামালপুরের তরুণী, প্রেমিকের বাড়িতে তালাবিয়ের দাবিতে বরগুনায় জামালপুরের তরুণী, প্রেমিকের বাড়িতে তালা। বর্তমানে ওই তরুণীর নিরাপত্তা দিয়ে দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লা। তিনি বলেন, আমরা তিন দিন ধরে মাহমুদুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। মেয়েটিকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছি। আসলে এর সমাধান দরকার এবং আমরা সেই চেষ্টা করছি।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে মাহমুদুল হাসানের চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ভাড়া বাসা গিয়ে তালাবদ্ধ দেখা যায়। সেখানে মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজিকে অবরুদ্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা। অবরুদ্ধ সোবাহান গাজী বলেন, আমি মানবিক কারণে মেয়েটির খোঁজ নিতে এসেছিলাম। আমার ভাগনে বা বোন ভগ্নিপতির সঙ্গে আমিও যোগাযোগ করতে পারছি না। আমি চাই এটার সমাধান হোক।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, মেয়েটি যদি লিখিত অভিযোগ করে তবে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।