লকডাউনেও রাজশাহীর অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচলের ঘোষণা দিয়েছে শ্রমিক নেতারা। বুধবার (৭ এপ্রিল) এই ঘোষণা দিয়ে শ্রমিক নেতারা দাবি করেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করবে। অন্যদিকে, দেশব্যাপী চলমান সপ্তাহ ব্যাপী লকডাউনের তৃতীয় দিন বুধবার রাজশাহী শহরের বেশিরভাগ দোকান খোলা রাখা হয়েছে।
জেলার ১১০টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জোট রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান দাবি করেন, ‘গত সোমবার জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দোকান খোলা রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত তাদের জানানো হয়নি ঠিকই। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে তা জানানোর কথা বলা হয়েছে। তাই তারা দোকান খোলার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের যারা নিরুপায় হয়ে গেছেন তারাই মূলত দোকান খুলেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, নগরীতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল করলেও যাত্রী ছিল খুব কম। নগরীর বাইরে সকল উপজেলায় এমনকি রাজশাহী নওগাঁ, রাজশাহী চাঁপাই ও নাটোর রুটেও বাস চলেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী জানান, যাত্রীদের সুবিধার্থে বুধবার থেকে রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে বাস চলাচল শুরু করা হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে বাসগুলো চলাচল করছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাসের অর্ধেক সিটে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার সরকারি এক সিদ্ধান্তে জানানো হয়, সীমিত আকারে সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলাচল করবে। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর ও ময়মনসিংহ।
এদিকে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাহেববাজার এলাকায় দোকানপাট খোলা দেখে সেগুলো বন্ধ করতে আসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট। এ সময় ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ না করে বিক্ষোভ ও হৈচৈ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিরারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমরা কাউকে (দোকান খুলতে) মানা করছি না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অল্প সংখ্যক দোকান খোলা রয়েছে।
দোকানদাররা বলছেন, তারা দোকান পরিষ্কার করার জন্যে খুলেছেন। হিসাব করার জন্যে বসেছেন। অল্প সময় পর দোকান বন্ধ করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর বেশিরভাগ দোকানই খোলা আছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
ইত্তেফাক/