ভারত থেকে অবৈধ পথে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অবাদে আসছে চিনি, বিড়ি, জিরা, মশলাসহ বিভিন্ন পন্য। আর এগুলো মজুদ ও বিপননের জন্য চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে বিয়ানীবাজার।
গ্রামীণ হাঠ বাজার থেকে শুরু করে খোদ পৌরশহরে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ পথে নিয়ে আসা এসব চিনিসহ মসলাজাত পন্য। আর হাত বাড়ালেই মিলছে বিড়ি, ইয়াবাসহ মাদক দ্রব্য। বিষয়টি এখন বিয়ানীবাজারে অপেন সিক্রেট হলে ও অদৃশ্য কারণে এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।
শুক্রবার অবৈধ পথে নিয়ে আসা ৩৪বস্তা চিনি ভর্তি ২টি পিকাপ গাড়িসহ ২জনকে আটক করেছে র্যাব-৯। আটককৃতরা হলেন কানাঘাট থানার জয়পদ গ্রামের মো. শরীফ উদ্দিনের ছেলে মো. আবুল কালাম(৩৬) এবং সাতপারি গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে আল আমিন(২২)। তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করেছে (মামলা নং-৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আটককৃত ২জন দীর্ঘদিন ধরে চোরাই পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে চিনি নিয়ে এসে দেশীয় চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেসের মোড়কে পরিবর্তন করে তা বাজারজাত করণের সাথে জড়িত। শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যার -৯ এর একটি দল বিয়ানীবাজার-চারখাই রাস্তার পূর্ব বাজার এলাকা থেকে (জালালনগর পূর্বরাস্তা) অভিযান চালিয়ে মালবাহী ২টি পিকাপ গাড়িসহ তাদের আটক করে। তাদের তথ্যমতে তল্লাসী করে একটি পিকাপ থেকে ৩৩বস্তা এবং আরেকটি পিকাপ থেকে ৩৪বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করে র্যাব।
এ ঘটনায় উদ্ধারকৃত মোট ৬৭ বস্তায় চিনি, ২টি পিকাপ গাড়ি জব্দ করে আটককৃত আবুল কালাম ও আল আমিন নামে দুই চোরাইকারবারির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে র্যাব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিয়ানীবাজারের পৌরশহরের পাশাপাশি প্রতিটি গ্রামীন হাঠবাজারে সয়লাভ চোরাইপথে আসা এসব চিনি। হাত বাড়াইলেই মিলছে আমদানি নিষিদ্ধ বিড়িসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। বেশীভাগ দোকানে অবাধে এসব পন্য বিক্রি করলেও রহস্যজনক কারনে প্রশাসন এবিষয়ে নিরব।
বিয়ানীবাজার পৌর শহরের ৩টি, দুবাগ বাজারে ২টি, বারইগ্রাম বাজারে ১টি, জলঢুপ থানা বাজারে ২টি ডিলার পয়েন্ট রয়েছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের। এসব ডিলার পয়েন্ট থেকে বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পৌছে দেওয়া হচ্ছে এসব চোরাই পন্য। আর বিশাল চোরাই জগৎ এর নিয়ন্ত্রণ করছেন বড়লেখার তালিমপুর এলাকার এক চিহ্নিত চোরাই কারবারি। এক সময় দোকানে দোকানে হেঁটে পলিথিন বিক্রি করা এই চোরাই কারবারি গত ৬ মাসের ব্যবধানে হয়ে গেছেন কোটিপতি।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা পর তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিয়ানীবাজার বিভিন্ন জায়গায় চিনি মজুদ ও বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, চোরাইকারবারিরা কানাঘাট থেকে চিনির মোড়ক পরিবর্তন করে বিয়ানীবাজার নিয়ে আসে। ফলে তাদের আটকের আইনগত সুযোগ কম।