দেশে ক্রমবর্ধমান সারের চাহিদা মেঠানোর লক্ষ্যে ২০১২ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় পুরোনো এনজিএফএফর পাশে শাহজালাল সারকারখানা স্থাপন করা হয়া দৈনিক ১৭৬০ মেঃটন ইঊরিয়া ঊতপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে কারখানাটি।
যাত্রার শুরুর দিকে কারখানাটি লক্ষ্য মাত্রা ঠিক থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তা কমতে থাকে। নবনির্মিত কারখানাটি চলতি অর্থ বছরে ১০ মাসে প্রায় ১০ বার বন্ধ হয় কারখানাটি।একই বছরের শুরুতে এমেনিয়া প্লান্টে যান্ত্রিক ত্রূটি দেখা দেয় ২ মাস ১০ দিন বন্ধ থাকার পর বিদেশ থেকে প্রকৌশলী এনে সংস্কার করা হলে ঊতপাদনে যায় কারখানাটি।
কিন্ত দেড় মাসের মাথায় যান্ত্রিক ত্রূটির দেখা দেয় কারখানা পাওয়ার প্ল্যান্টে।ফের বন্ধ হয় ঊতপাদন। এ অবস্থায় চলতি অর্থ বছর লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে না বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
কেনো বার বার বন্ধ হয়ে ঊতপাদন ব্যহত হচ্ছে তা এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে কারখানার শ্রমিক কর্মচারী স্সানীয়দের মাঝে।
নতুন কারখানা বার বার বন্ধ হওয়ায় প্রশ্নের সম্মুখীন করছে কর্তৃপক্ষ কে। কারখানা সূত্র জানায় কারখানা ওভার হোলিং জন্য ফরেনার যারা আসবে তাদের সিডিউল ঠিক করা হয়নি তাহলে কিভাবে ওভার হোলিং হবে।তাছাড়া যে মালামাল প্রয়োজন তা না আসা পর্যন্ত ওভার হোলিং করা সম্ভব না।ওভার হোলিং কাচামাল বাহিরে থেকে এলসি করে আনতে হয়।এলসির জন্য কাগজ চাহিদা পত্র পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানাযায় চাহিদা পত্র গেলে ও এখন পুরো পুরো এলসি ওপেন হয়নি। কবে হবে তা সঠিক করে বলতে পারছেনা কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানা কর্তৃপক্ষ আর জানায় ২০১৯ সালে শেষ ওভার হোলিং হয় এর পর আর এখন পর্যন্ত আর ওভার হোলিং হয়নি। কর্তৃপক্ষ আর বলছে তিন বছর ওভাল হোলিং না হলে ও বড় ধরনের কোন সমস্যা হবে না।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায় এখান থেকে চাহিদা পত্র পাঠালে ও বিসিআইসি ও হাই অথোরিটি এক মত না হওয়াতে অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সময় মতো করা যায় না। তাই আর এ বছর ও ওভার হোলিং হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার পর যদি জরুরি কিছু করতে হয় তবে যেখানে প্রয়োজন সেখানেই সপ্তাহ দিনের জন্য করা হবে। তারা আর জানায় আগের কারখানা ছিল ম্যানুয়েল একটা বন্ধ হলে সেটাই বন্ধ হতো। এখন অটো হওয়াতে একটি বন্ধ হলে পুরোটাই অচল হয়ে যায়।
টানা তিন বছর গত হলেও কারখানাটি ওভার হোলিং না করা কারখানা বার বার বন্ধ্যের কারন বলে মনে করেন বেশিরভাগ শ্রমিক। তাদের অনেকের মতে ওভার হোলিং করতে কর্তৃপক্ষ নারাজ।
কারখানা এমোনিয়া প্লান্টের শ্রমিক মো সাকিব জানান কেমিক্যাল কারখানা গুলো নিয়মিত ওভার হোলিং করতে হয়। অথচ আজ তিন বছর চলছে কোন ওভার হোলিং করা হয়নি। কেনো হচ্ছে তা কেউ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। যে কোন সময় কারখানটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তার মতে আগের কারখানা ছিল ম্যানুয়েল। বর্তমান মান কারখানাগুলো সব অটো তাই একটি মেশিন ট্রিপ করলে সব গুলে বন্ধ হয়ে যায়। যার কারনে বন্ধ হয় উৎপাদন।
কারখানার আরেক শ্রমিক আনসার আলী সিকদার বলেন অটো কারখানা চালানোর মত দক্ষ শ্রমিক না থাকার কারনে বার বার কারখানা বন্ধ হচ্ছে, সেই সাথে কেমিক্যাল কারখানাগুলো সব সময় ওভার হোলিং করে রাখতে হয় তা ও অন্যতম কারন।
সারকারখানা সিবিএর সভাপতি রাজু আহমেদ মুন্না বলেন প্রতেক জিনিসের একটা নিদিষ্ট সময় থাকে সময় পার হয়ে গেলে কোন কিছু আর ভাল চলে না। তিনি বলেন সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর নাগাদ ওভার হোলিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা ওভার হোলিং করবে তাদের সিডিউল পাওয়া যায়নি সেজন্য বিলম্ভ হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।এছাড়াও কিছু জটিলতা রয়েছে যার কারনে বিলম্ব হচ্ছে।
শাহজালাল সারকারখানা জিএম অপারেশন গোপাল চন্দ্র ঘোষের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন যে কোন কেমিক্যাল কারখানা দুই তিন বছরে ওভার হোলিং করা হয়। আমাদের একটু বিলম্ব হয়েছে আমাদের যারা ফরেনার আসবে তাদের সিডিউল পাওয়া যায়নি। তাছাড়া যে কাচামাল আমদানি করা সেগুলোর সব গুলোর এলসি ওপেন হয়নি, এছাড়া বাজেট ও আর কিছু বিষয় রয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্র সমাধান হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে কারখানার ব্যবস্থাপক মো জিয়াবুল হাসান কে দুই দিন তার মোঠ ফোনে একাধিক বার কল দিলে তিনি ফোন তুলেন নি।
উল্লেখ্য ২০১২ সালের ২৪ মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জে পুরাতন সারকারখানা পাশে শাহজালাল সারকারখানার ভিস্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমেরিকা নেদারল্যান্ডস ও ইতালির প্রযুক্তিতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে চীনের মেসার্স কমপ্লান্ট।অত্যাধুনিক এ সারকারখানা প্রধান প্লান্ট ইউরিয়া ও এমোনিয়ার প্রসেস লাইসেন্সর হচ্ছে এমোনিয়ায় আমেরিকার বিখ্যাত কোম্পানি কিলোগ ব্রাউন এন্ড রোটস (কেবিআর) এবং ইউরিয়া নেদারল্যান্ডের খ্যাতিমান কোম্পানি স্টেমিকার্বন বি. ভি।