একাত্তোর টেলিভিশনের সাংবাদিক রিফাত সুলতানা সকালেই কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে আনন্দের খবর ছড়ালেন। আর বিকেলেই মৃত্যুর সংবাদের মাধ্যমে বিষাদের ছায়া ছড়িয়ে দিলেন! একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক রিফাত সুলতানা এতদিন নিউজ লিখতেন। তথ্য চিত্র সাজাতেন। আজ সেই তিনিই ‘নিউজ’ হয়ে গেলেন!
সকালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে বিকেলেই মারা গেলেন। রেখে গেলেন ২ জমজ ছেলে ও সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে। স্বামী নাজমুল শোকে নির্বাক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্ত ছিলেন রিফাত সুলতানা। রিফাত-নাজমুল দুজনের কর্মস্থল বেসরকারি স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেল একাত্তর টিভি৷ সদা হাসিমুখ রিফাত সুলতানার আকস্মিক এই মৃত্যুতে সহকর্মীরা শোকাহত। রিফাত সুলতানা ছিলেন একাত্তর টিভির প্রযোজক।
তার সহকর্মী আরিফ জানান, সন্তানসম্ভবা রিফাত সুলতানা সপ্তাহ খানেক আগে করোনা পজিটিভ হন। শারীরিক জটিলতা থাকায় আগে ভাগে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হন। রাজধানীর ইমপালস্ হাসপাতালে শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি। সেই আনন্দের খবর শুনতে না শুনতেই বিকেলে শুনি রিফাত আর নেই! রিফাতের মৃত্যুতে ফেসবুকে তার সতীর্থ-সহকর্মীরা কষ্টে কাতর। দেশের সিনিয়র সাংবাদিক এবং জিটিভি’র এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘খুবই দুঃখজনক. তুমি আমাদের দলের কী বিশাল অংশই না ছিলে… আর এখন তুমি চলে গেলে!’
রিফাত ফেসবুকে তার সর্বশেষ পোস্ট দিয়েছিলেন ২ মার্চ। চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া হাসিমুখের একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি কোনো ক্যাপশন ছাড়া। আর ১৩ জানুয়ারি বাগানে দাঁড়িয়ে ফেইরি লাইট হাতে পোস্ট করা ছবির ওপরে লিখেছিলেন, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই দুনিয়ায় শয়তান আছে, কিন্তু আলো সবসময় অন্ধকারকে জয় করতে জানে!’ সেই আলো হাতে নিয়েই রিফাত এখন অসীম আকাশে।
সহকর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে একাত্তর টিভির প্রযোজক মাজহারুল মাসুম বলেন, সকালে সুলতানা সন্তান জন্ম দিয়েছেন। আর বিকেলে তার মৃত্যুর সংবাদ আমরা পেয়েছি। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার শাশুড়ি। এছাড়া রিফাতের স্বামীও করোনায় আক্রান্ত।
জানা যায়, আজ সকালে ইমপালস হাসপাতালে রিফাতের কন্যা সন্তান জন্ম দেন। সদ্যোজাত সন্তানের অবস্থাও খারাপ ছিল। এ কারণে সকালেই তার কন্যা সন্তানকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শিশুটি বিশেষ ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।