///

সিলেটে বন্যা : বিপাকে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

21 mins read

একটানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে প্রতিনিয়ত বাড়তে সিলেটের নদ-নদীর পানি। বিভিন্ন এলাকা ও জনপদে হুঁ হুঁ বাড়ছে বন্যার পানি। বর্তমানে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে ডজন খানেক উপজেলা প্লাবিত হয়েছে।

পরিস্থিতিতে লোকালয়ের পাশাপাশি শহরেও প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। ইতিমধ্যে বাসা-বাড়ি গুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ঘরবন্দী হয়েছেন হাজারো মানুষ। সিলেটের মানুষের পাশাপাশি চরম বিপাকে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারি বর্ষণের ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে পাশে আখালিয়া, তপোবন আবাসিক, সুরমা আবাসিক এলাকা এবং নেহারীপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

কিছু কিছু জায়গায় হাটু পরিমাণ, কিছু জায়গায় কোমর অব্দি পর্যন্ত পানি উঠেছে। এতে মেসে ও বাসাবাড়িতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ নৌকা দিয়ে, আবার কেউ কেউ পানিতে ভিজে প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে থাকছেন তারা। তবে বেশ কিছু দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়ে বেড়েছে নদী, খাল-বিলের পানি। ফলে বিপাকে পড়ছেন এসব এলাকার বসবাসরত মানুষ। অনেক এলাকার বিভিন্ন ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।

শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়ে ঝামেলা পড়তে হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায়, ঠিকমতো পড়ার সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

তপোবন এলকায় বসবাসরত শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, বর্তমানে আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। এ সময়ে বন্যার পানি যেনো মরার উপর খাঁড়ার ঘা দাঁড়িয়েছে । এতে মেসে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাব এবং অস্বাস্থ্যকর পানির উপর দিয়ে বাজারে, ক্যাম্পাস ও টিউশনিতে আস-যাওয়া নিয়ে ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। মনে হচ্ছে তপোবন এলাকার বন্যা যেনো দুর্ভোগের এক অপর নাম।

সিলেটের উপশহরে অবস্থানরত আরেক শিক্ষার্থী সাফা খান রুবা বলেন, আমাদের বাসা ও পাশ্ববর্তী এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই ও নেট নাই। তাছাড়া আমার বাসার নিচের তলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলা হইছে। পরিস্থিতি ভালো না, দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে নগরীতে বন্যায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে বেশ কয়েকটি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়েছে বলে জানা যায়। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মাহবুবুর রশিদ বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বন্যার কারণে ৩য় বর্ষের একটি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। বন্যায় আমি নিজেও দুর্ভোগে পড়েছি। যদি শিক্ষার্থীরা চায় তাহলে সামনের পরীক্ষাও পিছানো হতে পারে।

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে ভিসি স্যারের সাথে ডীন, প্রক্টর ও বিভাগীয় প্রধানদের আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। তাই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কোন শিক্ষার্থী যদি তাদের সমস্যার কথা বিভাগে জানায়, তাহলে বিভাগ চাইলে আজকের (বুধবার) পরের পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে পরবর্তীতে নিতে পারবেন। তাছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর ও তাদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি তারা কি ধরণের সমস্যায় আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Latest from Blog

x
English version